• E-paper
  • English Version
  • বৃহস্পতিবার, ১৯ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০৭:১৮ পূর্বাহ্ন

×

ক্ষতিগ্রস্থ এলাকা পরিদর্শন  উপকূলীয় মানুষের জান-মাল রক্ষা করবে  সরকার-এমপি রশীদুজ্জামান 

  • প্রকাশিত সময় : মঙ্গলবার, ২৮ মে, ২০২৪
  • ৩৬ পড়েছেন
সোলাদানা হাইস্কুল সংলগ্ন ভাঙ্গা সড়কে বালির বস্তা দিয়ে মেরামতের তদারকি করেন এমপি মোঃ রশীদুজ্জামান
স্নেহেন্দু বিকাশ,
খুলনা-৬ আসনের এমপি রশীদুজ্জামান ঘুর্ণিঝড় রেমালের তান্ডবে মারাত্মক ক্ষতিগ্রস্থ সোলাদানা, দেলুটি পরিদর্শনকালে বলেছেন,ঘুর্নিঝড় ঝড়ে ক্ষতিগ্রস্থ  উপকূলীয় মানুষের জান-মাল রক্ষায় প্রধানমন্ত্রী সবকিছু করার আশ্বাস দিয়েছেন। মঙ্গলবার দিনব্যাপী সোলাদানা ও দেলুটি’তে ক্ষতিগ্রস্ত এলাকা পরিদর্শনকালে তিনি এ কথা বলেন। এমপি  আরোও বলেন, ইতোমধ্যে পানি সম্পদ মন্ত্রী ও ত্রান মন্ত্রীসহ সংশ্লিষ্টদের সাথে যোগাযোগ হয়েছে।, প্রথমে আমরা ভাঙন কবলিত বেড়িবাঁধ মেরামত করে পোল্ডার রক্ষায় গুরুত্ব দিয়েছি।  এর পর ইউপি চেয়ারম্যানের তালিকা হাতে পেলে ক্ষয়ক্ষতির পরিমান নির্নিয় করে পর্যাপ্ত ত্রান বা খাদ্য-সুপেয় পানি রোগ প্রতিরোধে ঔষধ সরবরাহ করা হবে। তিনি মঙ্গলবার দুপুরে উপস্থিত থেকে সোলাদানায় বাঁধ মেরামত ও  হাইস্কুল সংলগ্ন যোগাযোগ বিছিন্ন সড়কে লোকজন নিয়ে বালির বস্তা ফেলে চলাচল উপযোগী করেন।
 ঘূর্ণিঝড়ে সোলাদানা,লস্কর,দেলুটি, লতা,রাড়ুলী, কপিলমিনি,হরিঢালী, গড়ইখালীসহ ২৬ টি পয়েন্টে বেড়িবাঁধ ভেঙ্গে ৯টি ইউনিয়ন ও ১টি পৌরসভার কমপক্ষে ৪০ থেকে ৫০টি গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। রাস্তা—ঘাট তলিয়ে গিয়ে ও পানির তিব্র স্রোত্রে রাস্তাঘাট ভেঙ্গে চুরে সড়কপথে  উপজেলার সাথে সোলাদানার যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়েছে। ৪ হাজার পুকুর—জলাশয় ও চিংড়ি ঘের ভেসে গিয়ে ৭২ কোটি টাকার ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। বিদ্যুৎ ব্যবস্থা স্বাভাবিক করতে হিমশিম খাচ্ছেন পল্লী বিদ্যুৎ কতৃর্পক্ষ। ইতোমধ্যে বেশিরভাগ এলাকার ক্ষতিগ্রস্থ বাঁধ উপজেলা প্রশাসন, পানি উন্নয়ন বোর্ড ও স্থানীয় কতৃর্পক্ষ যৌথভাবে প্রাথমিক মেরামত করতে পারলেও কিছু কিছু এলাকার বাঁধ এখনো মেরামত করা সম্ভব হয়নি। অনেকেই বলছেন ঘূর্ণিঝড় রেমাল এর ক্ষয়ক্ষতি আইলা’র ক্ষয়ক্ষতি ছাড়িয়ে যেতে পারে।এতে সাধারণ মানুষের চরম দূর্ভোগ সৃষ্টি হয়। এদিকে রেমাল এর আঘাতে লন্ডভন্ড হয়ে যায় পানি উন্নয়ন বোর্ডের ওয়াপদার বেড়িবাঁধ। পানি উন্নয়ন বোর্ড কর্তৃপক্ষ ও স্থানীয় সূত্র অনুযায়ী উপজেলার পৌরসভা সহ সবকটি ইউনিয়নে ওয়াপদার বেড়িবাঁধ ভেঙ্গে পোল্ডার অভ্যন্তরে লবণ পানি ঢোকে। বাঁধ ভেঙ্গে ৪০ থেকে ৫০টি গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। পৌরসভার শিববাটী এলাকার একাধিক স্থানে বাঁধ ভেঙ্গে ভিতরে পানি ঢোকে। রাড়–লী ইউনিয়নের জেলে পল্লী সহ কয়েকটি স্থান থেকে এলাকায় পানি প্রবেশ করে। অনুরূপভাবে গড়ইখালী, লস্কর, গদাইপুর সহ অন্যান্য ইউনিয়নে বাঁধ ভেঙ্গে বিভিন্ন এলাকা ক্ষতিগ্রস্থ হয়। সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্থ হয় উপজেলার সোলাদানা ও দেলুটী ইউনিয়ন। জেলা পরিষদ সদস্য রবিউল ইসলাম গাজী ও সিপিপি টিম লিডার আব্দুল্লাহ আল মামুন জানান, ঘূর্ণিঝড় রেমাল এর আঘাতে আইলার চেয়েও ভয়াবহ ক্ষতি হয়েছে সোলাদানা ইউনিয়নে। এ ইউনিয়নের বরই তলা সুধীরের বাড়ী, ভাঙ্গাড়িয়া, সোলাদানা বাজার সংলগ্ন নতুন গেট—পুরাতন গেট, হরিখালী, পশ্চিম কাইনমুখী, বেতবুনিয়া খেয়াঘাট ও সোনাখালী এলাকা সহ অসংখ্য স্থানে ওয়াপদার বাঁধ ভেঙ্গে ইউনিয়নের প্রায় ২০ গ্রাম তলিয়ে গেছে। পানির প্রবলস্রোতে নতুন গেট ও পুরাতন গেট এলাকার প্রধান সড়কের পিচ ভেসে গিয়ে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে গিয়েছে প্রধান সড়ক। সোলাদানা মাধ্যমিক বিদ্যালয় সহ অসংখ্য শিক্ষা ও ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান পানিতে তলিয়ে গেছে বলে জানান প্রধান শিক্ষক আমিনুর রহমান। এলাকাবাসীকে সাথে নিয়ে এ ইউনিয়নের কয়েকটি ক্ষতিগ্রস্থ বাঁধ মেরামত করেছেন বলে জানান, সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান এসএম এনামুল হক। অনুরূপভাবে দেলুটী ইউনিয়নের তেলিখালী, কালিনগর, দারুন মল্লিক, দেলুটী, জিরবুনিয়া, গেওয়াবুনিয়া, চকরিবকরি ও মধুখালী সহ কয়েকটি স্থানের বাঁধ ভেঙ্গে ইউনিয়নের ১৫ গ্রাম পানিতে তলিয়ে গেছে বলে জানান ইউপি চেয়ারম্যান রিপন কুমার মন্ডল। এদিকে ঘূর্ণিঝড়ের তান্ডবে লন্ডভন্ড হয়ে যায় বিদ্যুৎ ব্যবস্থা। বিদ্যুৎ ব্যবস্থা স্বাভাবিক করতে হিমশিম খাচ্ছেন সংশ্লিষ্ট কতৃর্পক্ষ। পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির ডিজিএম রেজায়েত আলী জানান, ঝড়ে বিদ্যুতের ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। অসংখ্য খুঁটি ভেঙ্গে দুমড়ে মুচড়ে ও তার ছিড়ে যায়। মঙ্গলবারের মধ্যে প্রায় ৯০ ভাগ বিদ্যুৎ ব্যবস্থা স্বাভাবিক হলেও কিছু ক্ষতিগ্রস্থ এলাকা রয়েছে যেখানে স্বাভাবিক হতে একটু সময় লাগবে। উপজেলা চিংড়ি চাষী সমিতির সভাপতি গোলাম কিবরিয়া রিপন জানান, এমনিতেই চিংড়ি চাষীরা বিপাকে রয়েছে এরপর ঘূর্ণিঝড় রেমাল চাষীদের সর্বশান্ত করে দিয়েছে। সিনিয়র উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা সৈকত মল্লিক জানান, প্রাথমিক তথ্য অনুযায়ী উপজেলায় ৪ হাজার পুকুর জলাশয় ও মৎস্য ঘের পানিতে তলিয়ে গেছে। এতে কমপক্ষে ৭২ কোটি টাকার ক্ষতি হয়েছে। উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা ইমরুল কায়েস জানান, ক্ষতিগ্রস্থ এলাকায় খাদ্য সহায়তা অব্যাহত রয়েছে। মঙ্গলবার সকালে উপজেলার সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্থ ইউনিয়ন সোলাদানা ও দেলুটী ইউনিয়ন পরিদর্শন করে ক্ষতিগ্রস্থ বাঁধ ও সড়ক মেরামত কাজ তদারকি করার মাধ্যমে এগিয়ে নেন স্থানীয় সংসদ সদস্য মোঃ রশীদুজ্জামান। এ সময় অন্যান্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন, পাউবো’র উপ—বিভাগীয় প্রকৌশলী এসএম রিফাত বিন রফিক, ওসি ওবাইদুর রহমান, সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান আব্দুর রাজ্জাক মলঙ্গী, উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শেখ কামরুল হাসান টিপু, যুগ্ম—সাধারণ সম্পাদক আনন্দ মোহন বিশ্বাস, জেলা পরিষদ সদস্য রবিউল ইসলাম গাজী, উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান শিয়াবুদ্দীন ফিরোজ বুলু, মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান লিপিকা ঢালী,সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান এনামুল হক, প্রভাষক আব্দুল ওয়াহাব বাবলু, ময়না বেগম, অনিতা রানী মন্ডলসহ ওয়ার্ড সদস্যরা সহ বিভিন্ন শ্রেনী পেশার মানুষ।

আপনার সামাজিক মিডিয়া এই পোস্ট শেয়ার করুন

এই বিভাগের আরো খবর

ওয়েবসাইট ডিজাইন প্রযুক্তি সহায়তায়: BD IT SEBA